আলাউদ্দিন, নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩/০১/২০২৫ ৯:১০ পিএম , আপডেট: ০৩/০১/২০২৫ ৯:১৫ পিএম

রোহিঙ্গা ইস্যুর কোনো সমাধান নেই; বরং সংকট দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। এবার রোহিঙ্গা সংকট এবং দেশি-বিদেশি দাতা সংস্থাদের বৈষম্যমূলক আচরণ নিয়ে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয়রা।

২০১৭ সালের রোহিঙ্গা ঢলের পর থেকেই স্থানীয়রা তাদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার ও দাবি জানিয়ে আসছে। হয় এনজিওতে চাকরি নিশ্চিত করতে হবে, না হয় দ্রুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করতে হবে মর্মে শুরু থেকেই দাবি জানিয়ে আসছে স্থানীয়রা।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার পালংখালী স্টেশন চত্বরে স্থানীয়দের সংগঠন অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির আয়োজনে বিশাল এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে হাজারো স্থানীয় জনসাধারণকে বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।

‘আর নয় অনুপ্রবেশ, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চায় বাংলাদেশ’ স্লোগানে আয়োজিত এই কর্মসূচি থেকে নতুন করে অনুপ্রবেশ বন্ধ, দ্রুত প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোসহ ৭ দফা দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে কর্মরত বিভিন্ন এনজিওর চাকরি থেকে ছাঁটাই বন্ধ, পুনর্বহালসহ চাকরিতে অগ্রাধিকারের দাবি তুলেছেন স্থানীয় শিক্ষিত সমাজ।

মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তৃতা করেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরোয়ার জাহান চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘এখনো লাখের কাছাকাছি রোহিঙ্গা সীমান্তের ওপারে অবস্থান করছে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য। একজন রোহিঙ্গাও যাতে বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে, সেই পদক্ষেপ সরকারকে নিতে হবে। কারণ বাড়তি রোহিঙ্গাকে ধারণ করার জায়গা আমাদের নেই।’

উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তে বিজিবির সদস্য বাড়ানোর দাবি রেখে এই বিএনপি-নেতা বলেন, ‘অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সরকার বললে প্রয়োজনে আমরা ভলান্টিয়ার হিসেবে সহযোগিতা করব। আমরা চাই আর কোনো রোহিঙ্গা যাতে বাংলাদেশ ঢুকতে না পারে।’

রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয়শিবিরে কর্মরত এনজিও-আইএনজিওদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি বাক্য উচ্চারণ করে সরওয়ার জাহান বলেন, ‘১৫ লাখ রোহিঙ্গার পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার কড়ায়-গন্ডায় বুঝিয়ে দিতে হবে। বেসরকারি সংস্থাগুলোকে ইচ্ছেমতো কাজ করতে দেওয়া হবে না।’ এ সময় এক মাসের আলটিমেটাম ঘোষণা করেন তিনি।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রবিউল হোসাইন। দাবিগুলো হলো: ১. আশ্রিত রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করতে হবে। ২. রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে সীমান্তে কঠিন নিরাপত্তাবলয় জোরদার করতে হবে। ৩. অবৈধভাবে ২০২৪ সালে অনুপ্রবেশ করা লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে এফডিএমএন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করে (বায়োমেট্রিক) তাদেরকে পুশব্যাকের জন্য কার্যকর কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে। ৪. স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ৫. চাকরিসহ ক্যাম্প ব্যবস্থাপনায় স্থানীয়দের প্রাধান্য (নূন্যতম ৫০%) নিশ্চিত করতে হবে। ৬. কাঁটাতারের বাইরে রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণ বন্ধ করতে হবে ও ক্যাম্পের বাইরে রোহিঙ্গাদের বাসাভাড়া বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এবং ৭. ক্যাম্পের চাকরির নিয়োগ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আরআরআরসি প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে।

অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার আজাদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এম.মোক্তার আহমেদ, সিনিয়র আইনজীবী ও অ্যাডিশনাল পিপি অ্যাড.রেজাউল করিম রেজা, আইনজীবী ব্যারিস্টার সাফাত ফারদিন রামিম চৌধুরী, পালংখালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হেলাল উদ্দিন মেম্বার, পালংখালী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আবুল আলা রোমান, অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির উপদেষ্টা মোহাম্মদ শাহজাহান, পালংখালী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন চৌধুরী, উখিয়া উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জয়নুল আবেদীন জয়, সদস্য সচিব রিদুয়ানুর রহমানসহ আরও অনেকেই।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে নিহত মেজর সিনহা হত্যা মামলা দ্রুত শুনানি করতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে আবেদন

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে নিহত সেনাবাহিনীর ...

রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনসহ ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালীতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ, রোহিঙ্গাদের দ্রুত স্বদেশে প্রত্যাবাসনসহ ৭ দফা ...

উখিয়ার সন্তান রফিকুল করিমকে নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়লে যুগ্ম সচিব পদে পদায়ন

উখিয়ার সন্তান রফিকুল করিমকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়লে যুগ্ম সচিব পদে পদায়ন করা হয়েছে। ...